সালমান-ঐশ্বরিয়ার প্রেম কেন ভেঙে গিয়েছিল (2025)

সালমান খান ও ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। চলতি শতকের শুরুর দিকে তাঁদের প্রেম ছিল অন্যতম চর্চিত বিষয়। সালমান-ঐশ্বরিয়ার সম্পর্ক বহুদূর গড়িয়েছিল, এমনকি তাঁদের বিয়েও হওয়ার কথা ছিল। কেন ভেঙে যায় এই তারকার প্রেম?
‘হাম দিল দে চুকে সনম’ ছবির শুটিং থেকে প্রেম শুরু সালমান ও ঐশ্বরিয়ার। সেই প্রেম নিয়ে চর্চাও হয়েছিল বিস্তর। ঐশ্বরিয়ার প্রেমে নাকি সেই সময়ে ডুবে ছিলেন সালমান। কিন্তু সে সময় সালমানের সম্পর্ক ছিল সোমি আলির সঙ্গে। কিন্তু ঐশ্বরিয়া ও সালমানের বারবার সাক্ষাৎ, সময় কাটানো কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি সোমি। তাঁদের ব্রেক আপ হয়ে যায়। সোমিও বিদেশে চলে যান।

অন্যদিকে ঐশ্বরিয়া ও সালমানও আরও কাছাকাছি আসার সুযোগ পেয়ে যান। সালমানের দুই বোন আলভিরা ও অর্পিতার সঙ্গেও বেশ ভালো সম্পর্ক হয়ে যায় অ্যাশের। মিডিয়া তখন তাঁদের প্রেমের গুঞ্জন নিয়ে প্রতিদিনই খবরের শিরোনাম করছে। সালমানও বলিউডে ঐশ্বরিযার পায়ের তলায় মাটি শক্ত করতে উঠে পড়ে লাগেন। তিনি কার সঙ্গে কাজ করবেন, কোন ছবি নেবেন, সে ব্যাপারেও পরামর্শ দিতে শুরু করেন সালমান।

ঠিক এমনই সময় ঐশ্বরিয়ার কাছে সুভাষ ঘাই পরিচালিত ‘তাল’ ছবির প্রস্তাব আসে। কিন্তু সুভাষ ঘাইয়ের তাঁর নায়িকাদের সঙ্গে নানা গসিপ আগে থেকেই চালু থাকায় এই ছবিতে ঐশ্বরিয়াকে কাজ করতে বারণ করেন সালমান, কিন্তু অ্যাশও ছাড়ার পাত্রী নন। তিনি অভিনয় করেন এবং সেই ছবিও বক্স অফিসে সুপারহিট হয়। কিন্তু ছবির এক প্রিমিয়ার পার্টিতে ঐশ্বরিয়া সম্পর্কে খারাপ কথা বললে সুভাষকে চড় মেরে বসেন ‘ভাইজান’।

ঐশ্বরিয়ার জীবন যেন আবর্তিত হতো সালমানের হাতেই। এদিকে সালমান ভাবতেন, এ তো তাঁর অধিকার। ঠিক এমন সময়েই হরিণ শিকার–কাণ্ডে নাম জড়ায় সালমানের। শুধু তা–ই নয়, শোনা যায়, এ সময় নাকি তাঁর সাবেক সোমি আলির সঙ্গেও সালমানের আবার কথাবার্তা শুরু হয়। তাঁর বাবার চিকিৎসার জন্য টাকাও পাঠান সালমান। কিন্তু সবটাই ঐশ্বরিয়াকে না জানিয়ে।

এদিকে পাল্লা দিয়ে চলছিল সালমানের মদের প্রতি আসক্তি আর ঐশ্বরিয়ার প্রতি অপরিসীম অধিকার ফলানো। একবার নাকি ঐশ্বরিয়ার বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে তিনি পাগলের মতো দরজা খোলার জন্য চিৎকার করতে থাকেন। সে সময় এই ঘটনা শিরোনাম দখল করেছিল অনেক সংবাদমাধ্যমের। ঐশ্বরিয়া দরজা না খুললে তিনি নিজেকে শেষ করে দেওয়ার হুমকিও দিতে থাকেন।

ঐশ্বরিয়ার বাড়ি থেকেও কিছুতেই এই সম্পর্ক মেনে নিতে চাইছিলেন না তাঁর মা–বাবা, সে কথা পরবর্তীকালে নিজেই বলেছিলেন সালমান। একবার এক অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে চোখে সানগ্লাস পরে পুরস্কার নিতেও ওঠেন ঐশ্বরিয়া। মনে খটকা লাগে উপস্থিত দর্শকদের। ঐশ্বরিয়া বলেছিলেন, চোখে ইনফেকশন হয়েছে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রির অন্দর বলছিল অন্য কথা।

সালমান নাকি গায়ে হাত তুলেছিলেন তাঁর। প্রথমে স্বীকার না করলেও পরবর্তী সময় সে কথা মেনে নিয়েছিলেন ‘মিস ওয়ার্ল্ড’। তিনি বলেছিলেন, একবার নয়, বহুবার তাঁকে শারীরিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে সালমানের কাছে। যদিও ‘ভাইজান’ কখনোই এই অভিযোগ মানেননি। তাঁর কথায়, ‘আমি ইমোশনাল, নিজেকে বহুবার আঘাত করেছি। কিন্তু সুভাষ ঘাই ছাড়া জীবনে কখনো কারও গায়ে হাত তুলিনি।’

একবার এক সাক্ষাৎকারে ঐশ্বরিয়ার নাম না করে সালমান বলেছিলেন ‘ওর বাবা কৃষ্ণরাজ রাই আমাকে পছন্দ করতেন না। আমার সাবেক সম্পর্কগুলোর জন্য ওর বাবা আমাকে মেনে নিতে পারেননি। ওর পরিবারের সঙ্গেও আমার ঝামেলা বেঁধেছিল ওর বাবার জন্যই।’
সে কারণেই কয়েক বছর আগে কৃষ্ণরাজ প্রয়াত হওয়ার পর ভাইজান প্রকাশ্যে কোনো প্রতিক্রিয়া দেননি বলে মনে করা হয়। কৃষ্ণরাজের স্মরণসভায় বি-টাউনের প্রথম সারির তারকারা উপস্থিত ছিলেন, কিন্তু সালমান আসেননি। এ বিষয়ে মুখও খোলেননি। যদিও সে সময় ঐশ্বরিয়া বলেছিলেন, ‘আমি মদ্যপ সালমান, বেহিসেবি সালমানের পাশে থেকেছি। কিন্তু ও কেবল আমাকে অত্যাচার করেছে। আমি সম্মান নিয়ে বেরিয়ে এসেছি।’

‘আত্মসম্মান ভূলুণ্ঠিত হচ্ছিল’, এই বলেই অবশেষে সম্পর্ক থেকে সরে আসেন ঐশ্বরিয়া। কিন্তু ব্রেকআপ–পরবর্তী ট্রমা থেকে কিছুতেই বের হতে পারছিলেন না সালমান। সালমানের পর বিবেক ওবেরয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ালেও তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন ‘সল্লু ভাই’, এমনটাই শোনা যায় বলিপাড়ায় কান পাতলে।

এই সম্পর্ক থেকে অব্যাহতি চাইছিলেন ঐশ্বরিয়া নিজেও। ‘কুছ না কহো’ ছবিতে তাঁর বিপরীতে ছিলেন অভিষেক বচ্চন। শোনা যায়, সালমান নাকি সেই ছবির শুটে গিয়েও ঝামেলা করেছিলেন। ভেঙে দিয়েছিলেন ঐশ্বরিয়ার গাড়ি। অভিষেক থেকে শাহরুখ, প্রায় সব সহ–অভিনেতাকে নিয়েই প্রবল সন্দেহ করতেন সালমান।

অনেক পরে এক সাক্ষাৎকার ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া নিয়ে কথা বলেছিলেন সালমানের ভাই আরবাজ খান। তাঁর ভাষ্যে, বিয়ের জন্য নাকি একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না ঐশ্বরিয়া। সেই কারণেই নাকি সালমানের সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে। নব্বইয়ের দশকে বিশ্বসুন্দরীর খেতাব জেতার পরে পরপর ছবিতে অভিনয় করছিলেন ঐশ্বরিয়া। সেই সময়ে অভিনেত্রীর সৌন্দর্যে মুগ্ধ ছিলেন দর্শক। তাঁর ক্যারিয়ারও ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তাই তখনই বিয়ে করতে চাননি ঐশ্বরিয়া। অন্যদিকে সালমান বিয়ে করে থিতু হতে চেয়েছিলেন।
তবে এরপর বহু বছর পেরিয়ে গেলেও সালমানের আর বিয়ে করা হয়নি। অন্যদিকে অভিষেক বচ্চনকে বিয়ে করে ঐশ্বরিয়া এখন এক সন্তানের মা।

তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস, আনন্দবাজার পত্রিকা

সালমান-ঐশ্বরিয়ার প্রেম কেন ভেঙে গিয়েছিল (2025)
Top Articles
Latest Posts
Recommended Articles
Article information

Author: Mr. See Jast

Last Updated:

Views: 6460

Rating: 4.4 / 5 (55 voted)

Reviews: 94% of readers found this page helpful

Author information

Name: Mr. See Jast

Birthday: 1999-07-30

Address: 8409 Megan Mountain, New Mathew, MT 44997-8193

Phone: +5023589614038

Job: Chief Executive

Hobby: Leather crafting, Flag Football, Candle making, Flying, Poi, Gunsmithing, Swimming

Introduction: My name is Mr. See Jast, I am a open, jolly, gorgeous, courageous, inexpensive, friendly, homely person who loves writing and wants to share my knowledge and understanding with you.